Home » বাইকিং টিপস » অশ্বচালনা টিপস » কিছু ভুল ধারনা মোটরবাইক চালানোর ক্ষেত্রে !

কিছু ভুল ধারনা মোটরবাইক চালানোর ক্ষেত্রে !

 

বাইক চালনা এখন একধরনের চ্যালেঞ্জ। রাস্তা বাইক, বাস, যানবাহন, পথচারীতে পরিপূর্ণ। যে কোন সময় পাল্টে যেতে পারে পরিস্থিতি।

সুতরাং, বাইক/মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হয়। নয়তো মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন আরোহী। মোটরসাইকেল চালানোর নিরাপত্তার ব্যপারে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। তেমনি কিছু ভুল ধারণা আপনাদের সামনে উপস্থাপনা করছি

আর্টিকেলটি পড়ে আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না

 আমি কি নতুন রাইডার যে আমার হেলমেট লাগবে

অনেকেই ভাবেন আমি ত অনেক দিন ধরে বাইক চালাই। আমি জানি কীভাবে বাইক চালাতে হয়। আমার কেন হেলমেট লাগবে? আবার অনেকে ভাবেন আমি ত রাফ চালাই না, আমার Accident করার সম্ভাবনা নেই। ভাই দুর্ঘটনা কি বলে আসে?

আবার অনেকে ভাবে হেলমেট ব্যবহার করলে দেখতে সমস্যা হবে। কিন্তু অবশ্যই তা হয় না। দেখার জন্য যথেষ্ট সুবিধা রেখেই এসব হেলমেট তৈরি করা হয়। পুরো মাথাসহ মুখ ঢাকা থাকে বলে বাতাস, ধুলো, পোকা থেকে রক্ষা পায় আপনার চোখমুখ, আর দুর্ঘটনার সময়ে যে মাথাকে নিরাপদ রাখে তা তো বলাই বাহুল্য।

এইসব ধারনা বাদ দিন, হেলমেট ব্যাবহার কে বাইক চালানোর জন্য আবশ্যকীয় উপকরণ মনে করুন।

আমার অনেক টাকা, আমি বড়/দামি বাইক নিয়ে চালানো শুরু করব

আমার টাকার অভাব নেই। আমি ১৫০সিসি দিয়েই শুরু করব। নষ্ট হলে সমস্যা নেই, নতুন একটা নিয়ে নিব। আমারে এলাকায় সবাই চিনে, আমি কি ১০০সিসি বাইক চালাতে পারি?

আপনারও কি এমন অবস্থা? তবে জেনে রাখুন বাইক নষ্ট হলে কিনতে পারবেন, কিন্তু জীবন?

অনেকেই বলেন শুরুতেই বাইক নিয়ে প্র্যাকটিস করা ভালো। কিন্তু এটা মোটেই ভালো আইডিয়া নয়। শুরুতেই অতিরিক্ত কনফিডেন্স নিয়ে বড় একটা বাইক নিয়ে চালানো বোকামি। শুরুতেই বড় বাইক ব্যবহার না করে মাঝারি ধরণের বাইক বেছে নিন।

লুকিং গ্লাস ত খ্যাত বাইকার রা ব্যাবহার করে

আমি ক্লাশ ২/৪/৫ থেকে বাইক চালাই। বাইক চালানোর অভিজ্ঞটা আমার বিগত ৮/১০/১১ বছরের। আমার লুকিং গ্লাস লাগে না।

লুকিং গ্লাস ! ওহ এটাত বাইকের স্বাভাবিক লুক টাকেই নষ্ট করে দেয়। কেমন দেখায়? মনে হয় সামনে দুইটা কান লাগানো। আমার বন্ধুরা এটা ব্যাবহার করে না, আমি করলে আমায় খ্যাত বলবে।

আমি কি মেয়ে নাকি, যে বাইকের সামনে আয়না লাগায় রাখব? এটাত মেয়েদের জন্য। মেয়েদের মত কিছুক্ষণ পর পর আয়না দেখার অভ্যাস আমার নেই।

আপনি যদি এই ধরনের অভিজ্ঞ রাইডার হন তবে অনুরোধ করছি, মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। হতে পারে আপনার লুকিং গ্লাস হিন বাইকের বাঁক নেওয়া পিছের বাইকার দের জন্য বিপদের কারন। তারাও যদি আপনার মত এই ধরনের অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তবে, দুজনের মোলাকাতের ফল সরুপ আজ্রাইলের আগমন অবশ্য কর্তব্য।

অতিরিক্ত শব্দের উপকরন লাগানো

আমার বাইক একটু আলাদা হওয়া চাই। আমি গেলে জেন মানুষ বুঝতে পারে যে অমুক এইমাত্র গেল।

এসব বাইকে ভীষণ শব্দ করে বলে আশেপাশের অন্যান্য যানবাহনের চালকেরা এর ব্যাপারে সতর্ক থাকেন, এতে দুর্ঘটনা হয় না- এই ধারণা যদি আপনারও থাকে তাহলে তা ঝেড়ে ফেলুন। কারণ সামনের চালকেরা এটা শুনতে পাবেন এমন আশা করা যায় না। বরং এমনভাবে বাইক চালান যাতে আশেপাশের চালকেরা সহজেই আপনাকে দেখতে পায়। ডিভাইডারের কাছাকাছি থাকুন। রাতের বেলায় রিফ্লেক্টিভ কাপড় পড়ুন। অন্যান্য যানবাহনের বেশি কাছে চলে যাবেন না।

লেদার জ্যাকেট শুধু ফ্যাশন নয়

লেদারের জ্যাকেট মূলত বাইকাররা পরেন, কিন্তু তারমানে এই নয় যে এটা শুধু ফ্যাশন করে পরেন তারা। এটা মূলত লেদারের শক্তপোক্ত স্বভাবের কারণে বেছে নেন তারা। কোনো দুর্ঘটনায় রাস্তার সাথে ঘষা খেলেও লেদার সহজে ছেঁড়ে না, ফলে আরোহী কিছুটা হলেও আহত হবার হাত থেকে রেহাই পান। বড় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এটা কার্যকরী না হলেও ছোটখাটো আঘাত থেকে আরোহীকে বাঁচাতে পারে ভালো মানের একটি লেদার জ্যাকেট। আর শীতকালে বাইকারকে ঠাণ্ডার হাত থেকেও তা রক্ষা করে। কিছু কিছু লেদার জ্যাকেটে বাইকারকে নিরাপদে রাখার জন্য কাঁধ, কনুই এবং পিঠে প্যাডিং করা থাকে। অনেকে জ্যাকেট না পরলেও লেদার গ্লাভস, ভেস্ট এবং বুট পরে থাকেন আত্মরক্ষার জন্যই।

ক্র্যাশ হতে যাচ্ছে বুঝলে মোটরবাইক শুইয়ে দিতে হবে

অনেকেই উপদেশ দেন, ক্র্যাশ হতে যাচ্ছে বুঝলে মোটরবাইক শুইয়ে দিতে হবে কাত করে। আসলেই কি তাই? অ্যাকশন মুভিতে এটা করা হয় তারমানে এই নয় যে বাস্তবেও আপনি তাই করবেন। এ সময়ে আসলে ব্রেক করা এবং যার সাথে ক্র্যাশ করতে যাচ্ছেন তার থেকে দূরে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া ছাড়া অন্য কোনও কিছু চিন্তা করার দরকার নেই, সম্ভবও না। আর অবশ্যই ক্র্যাশ এড়াতে সর্বক্ষণ সাবধানে বাইক চালাতে হবে।

এছাড়াও মেনে চলুন আরও কিছু সাবধানতা-

– সজ্ঞানে বাইক চালান। ঘুম, ওষুধ বা মাদকের প্রভাব নিয়ে কোনো অবস্থাতেই বাইক চালাবেন না। এতে আপনি এবং আশেপাশের সব যানবাহনের মানুষের প্রাণের ঝুঁকি থাকে।

– হঠাৎ বাইক থামাতে হলে কখনোই ফ্রন্ট ব্রেক আগে কষবেন না। প্রথমে রিয়ার ব্রেক ব্যবহার করুন সব অবস্থাতে।

– বালু এবং পাথরকুচির ওপর দিয়ে চালানোর সময় খুব সাবধান থাকুন।

– সম্ভব হলে খারাপ আবহাওয়ায় বাইক চালানো থেকে বিরত থাকুন।

Comments

comments

error: Content is protected !!