বর্তমান সময়ে মোটরসাইকেল বা বাইক চালানো ফ্যাশনই শুধু নয় নগরীর যানজট কিংবা ব্যস্ত সড়কে দ্রূত ও স্বাচ্ছন্দে চলাচলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহনও বটে। কিন্তু অপনি হয়তো অবাক হবেন ২০১৭ সালের ৩৩৪৯ টি সড়ক দূর্ঘটনার মধ্যে ৭২০ টিই মটরসাইকেল দূর্ঘটনা। এবং প্রতি বছর সড়ক দূর্ঘটনায় প্রায় ১২ হাজার মানুষের প্রানহানি এবং ৩৫ হাজার মানুষ আহত হন। এই হতাহতের ফলে একেকটি পরিবার অপূরনীয় ক্ষতির মুখে পড়ে। তাই নিরাপদ বাইক চালনায় আমাদের কিছু পরামর্শ।
-
- হেলমেট ব্যবহার করুন, বাইকারদের ৭৫ ভাগ হতাহতের কারন এই হেলমেট ব্যবহার নাকরা।
- যথাযথ পোশাক পরুন, যেটি অতিরিক্ত টাইট অথবা অতিরিক্ত ডিলা নয় এবং সাথে হাতমুজা এবং বুট জুতা পরুন।
- ভ্রমনের পূর্ব প্রস্তুতি নিন, জ্বালানি তেল, ব্রেক, হেডলাইট, হর্ন এবং চাকার হাওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হউন।
- বাইক চালনার ক্ষেত্রে আক্রমনাত্মক না হয়ে প্রতিরক্ষামূলক হউন।
- ট্রাফিক আইন মেনে চলুন।
- বাইক চালনায় সম্পূর্ণ মননিবেশ করুন।
- পেছনের যানবাহন দেখার জন্য লুকিং গ্লাস ব্যবহার করুন।
- যাত্রাপথে কোন রকম প্রতিযোগীতা নয়।
- চলন্ত বাইকে মোবাইল ব্যবহার করবেন না।
- হর্ন এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
মোটরসাইকেল নিয়মিত পরীক্ষা করুন: প্রতিবারই মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে বের হবার পূর্বে সব কিছু ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিবেন । বাইকের চেইন, ব্রেক হর্ণ জ্বালানী ইত্যাদি যথাযথভাবে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন যে সবকিছুই ঠিকমতো কাজ করছে, আর তা নাহলে যেকোন সময় যেকোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই আপনার নিজের এবং আপনার প্রিয় বাইকটির নিরাপত্তার জন্য নিয়মিত বাইক পরীক্ষা করুন ।
আবহাওয়ার পরিস্থিতি দেখুন : খারাপ আবহাওয়াতে মটরসাইকেল চালানো নিরাপদ নয়, ভারী বৃষ্টিতে এটি আরো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কারণ রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এসময় চাকা স্লিপ করতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে প্রায় ৩৮% মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পড়ছে মহাসড়কে বৃষ্টির মৌসুমে।
হেলমেট নিতে ভুলবেন না : হেলমেট দুর্ঘটনায় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে, তাই অবশ্যই বের হবার আগে আপনার হেলমেট সঙ্গে নিন। এক সমিক্ষায় দেখাগেছে মোটরসাইকেল দ্বারা সংঘটিত দূর্ঘটনায় ৭৫ ভাগ দুর্ঘটায় প্রানহানি হয় হেলমেট না থাকায়। তাই নিয়মিত হেলমেট ব্যাবহার করার অভ্যাস হরুন।
পরিধেয় পোশাক : একেবারে ছোট অথবা একেবারেই ঢিলেঢালা কাপড় পড়া মোটেই ভাল ধারণা নয়, কারণ এগুলোই দুর্ঘটনার কারন হতেপারে। ব্যাক্তিগত নিরাপত্তার কখা মাথায় রেখে শিতে ছিদ্রযুক্ত জ্যাকেট অথবা গ্রীষ্মে টি শার্ট পরতে পারেন। পরনে জিন্স এবং পায়ে বুট থাকলে ভাল।
ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জানুন: এটি খুবই প্রয়জনীয় বিষয়। বাংলাদেশের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখুন। এছাড়াও রাস্তায় গাড়ি চালানোর সাধারণ নিয়ম গুলো জানুন এবং মেনে চলুন।
লাইসেন্স সহ প্রয়জনীয় কাগজপত্র সাথেই রাখুন : বাইক নিয়ে বেরোনোর সময় অবশ্যই বাইকের নিবন্ধন সনদ, ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সনদ, বীমা সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সাথেই রাখুন।
সঠিক সহযাত্রী: অনেকেই বাইক চালনার সময় পেছনথেকে ভয় পাইয়ে দেয়, মোটরসাইকেল চালানোর সময় ভয় পাইয়ে দেবে এমন যাত্রী পিছনে না নেওয়াই ভাল। কারণ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময় আপনি একক সির্ধান্ত নিতে পারবেন না, এবং আপনাকে ভয় পাইয়ে দিবে, এতে করে হতেপারে দুর্ঘটনা।
মোবাইলে কথা বলা ও হেডফোন পরিহার করুন: সম্পূর্ণ মনোযোগ ড্রাইভিং এর দিকে রাখতে চেষ্টাকরুন। যেকোন প্রকার অমনোযোগীতা হতে পারে মারাত্নক দুর্ঘটনার কারণ। প্রয়জনে মোবাইলের রিংটোন বন্ধ রাখুন। হেডফোনে কথাবলা বা গানশোনা থেকে বিরত থাকুন।
প্রযুক্তির ব্যাবহার: নতুন প্রযুক্তির অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম চালু হয়েছে, প্রথমদিকে এটি অধুনিক কিছু বাইকে ব্যাবহৃত হলেও এখন অনেক বাইকেই এ সুবিধা থাকছে। এটি ব্যবহারের ফলে অতি দ্রুত বেকিং সম্ভব হচ্ছে।
টওভারটেকিং করার সময় যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করুন: ওভারটেকিং যেকোনসময়ই বিপদজনক, ওভারটেকিং হতেহবে বিবেচনা প্রসুত এবং অতিব সাবধানতার সাথে। বিশেষ করে বাস, ট্রাক অথবা কার ওভারটেকিং করার সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায়রাখা, হর্ণ এর যথাযথ ব্যাবহার করা, পাসলাইট ব্যাবহার করা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া।